নামায পড়া এত এত কঠিন কেন?

নামায পড়া এত এত কঠিন কেন?

ম্যাক্সওয়েল ম্যাল্টয, পেশায় একজন প্লাস্টিক সার্জন, ১৯৫০ সালে তার রোগীদের মধ্যে একটা প্যাটার্ন খেয়াল করেন! তিনি লক্ষ্য করেন যে কোন একটা সার্জারী, ফর এক্স্যাম্পল, কারো ফেস এ কোন সার্জারী হওয়ার পর সে নতুন চেঞ্জ এর সাথে এডজাস্ট করতে ২১ দিন সময় নেয়! এখান থেকে তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌছেন যে, যেকোন নতুন হ্যাবিটে এডজাস্ট করতে মানুষের ২১ দিন সময় লাগে!

রোযার মাস আসলে আমরা সবাই চেষ্টা করি পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার, আবার রোযা শেষ হলে দেখা যায়, শুধুমাত্র জুম্মার নামায পড়তে যাচ্ছি, অন্য নামায ছেড়ে দিচ্ছি! এর কারণ, সাধারণত নামাযের সময় গুলোতে আমরা বাইরে থাকি এবং নামায বাদ দিয়ে অন্য কাজগুলোকে জোর দিই! নামায যখন সামনে আসে তখন আমাদের মাথায় আসে আচ্ছা আমরা তো কাপড় পাক না, ওযু করবো কোথায়, নামায পড়ার জায়গা কোথায় বা আশে পাশের লোক কি মনে করবে?

আচ্ছা এই বিষয়গুলোকে যদি সহজ করা যায়, তাহলে কি আপনারা নামায পড়তে রাজি আছেন?

১. কাপড় পাকঃ ইসলাম ধর্ম বইয়ে লেখা, কাপড় পাক না থাকলে নামায হবে না! আমরা বাইরে যখন বের হবো, প্রতিদিন পরিষ্কার কাপড় পরে বের হবো। যদি কাপড় নাপাক হয়ে যায় কোন কারণে সমস্যা নেই, ঐ অবস্থায়ও নামায পড়া যাবে, কাপড়ের ওপর শুধু পানি ছিটিয়ে দিলেই পাক হবে!

২. ওযু করার জায়গা নেই, সমস্যা নেই! পানি দিয়ে ওযু করার দরকারই নেই যদি পানি না থাকে! আল্লাহ তাআলা বলেন,

(فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ صَعِيدٗا طَيِّبٗا فَٱمۡسَحُواْ بِوُجُوهِكُمۡ وَأَيۡدِيكُم مِّنۡهُۚ )

অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করো। সুতরাং তোমাদের মুখ ও হাত তা দ্বারা মাসেহ করো। [সূরা আল মায়েদা:৬]
যদি পবিত্র মাটি না পান, তাহলে আশে পাশে যা কিছু পবিত্র আছে (ফর এক্স্যাম্পল দেওয়াল) সেটা ব্যবহার করে তায়াম্মুম করে ফেললেও হবে!

৩. নামায পড়বো কোথায়? আমরা দিনের অনেক সময় গাড়ীতে কাটাই, গাড়ীতে বসেই নামায পড়ুন, যেখানে যে অবস্থায় আছেন সে অবস্থায় নামায পড়ুন, সুন্নত নামায নিয়ে টেনশন করার দরকার নেই, শুধু ফরয নামাজ পড়ুন!

৪. আশেপাশের লোক কি মনে করবে? আচ্ছা তার আগে দেখি নামায না পড়লে আল্লাহ কি মনে করবেন?

কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে— ‘কেন তোমরা সাকার নামক জাহান্নামে এলে? তারা বলবে, আমরা তো নামাজি ছিলাম না এবং আমরা মিসকিনদের খাবার দিতাম না; বরং আমরা সমালোচনাকারীদের সঙ্গে সমালোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। এমনকি আমরা প্রতিদান দিবসকে (কেয়ামত) অস্বীকার করতাম। আর এভাবেই হঠাৎ আমাদের মৃত্যু এসে গেল।’ (সূরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ৩৮-৪৭)

এখন আমাদের মনে আসতেই পারে সারাজীবন তো ঠিকমত নামায পড়লাম না, আমি তো জাহান্নামে যাবো! আশার কথা এটাই আল্লাহ সবসময় ক্ষমাশীল!

‘….. তবে যারা এরপর তওবা করে নিয়েছে, ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে তারাই তো জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি কোনো ধরনের জুলুম করা হবে না।’ (সূরা মারইয়াম, আয়াত : ৫৯-৬০)

নামায পড়া যদি এতই সহজ হয় আমরা আল্লাহর কাছে যদি মন থেকে মাফ চাই এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঠিকমত পড়ি তাহলে আর চিন্তার কি আছে? অভ্যাস গড়ে তোলা তো ২১ দিনের-ই ব্যপার, তাই তো?? আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন, সবকিছু সহজ করে দিন, আমীন।।

আমার অন্য লেখা পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Reviews

Popular Articles