তার ছেলেব্যালা নিয়ে লেখা কবিতাটা দেখানো শেষ করে
দ্রুত লুকিয়ে ফেললাম।
ফেলতেই হতো!
কারণ আমার কবিতায় কাটাছেঁড়া তার পুরনো অভ্যেস!
একবার বিজয় দিবস সাময়িকী তে কবিতা দিলে সে এমন প্ল্যাস্টিক-সার্জারী সম করলো
শয়তানের মুখে অমন একটা সার্জারি করতে পারলে সাক্ষাৎ দেবতা হতো জীবরাঈলের স্যামনে
ফাজিল ছোটবোন বলে বসলো ভাইয়া কবিতাটা কাকা লিখে দিয়েছেন, তাই না?
কট খেয়ে সেই যে কসম খেলাম, আর না…
এরপর কলেজে, ভার্সিটিতে একা একাই প্রসবঘরে যাই, কবিতার জন্ম দেই,
সময়ের স্রোতে আব্বা এখন নিজেই একটা কবিতা
পাতাঝরার দিনে সে যেভাবে ঝরে গেছে
শীতের আসি আসি সময়টায়,
ঋষভের দৌড়াতে শেখা বয়সটায়,
আমাকে জীবনভর একটা পড়ন্ত পাতার স্মৃতিতে আটকে রেখে…
প্রতি Fall-এই প্রতিফল পাচ্ছি তার!
আচ্ছা, পড়ন্ত পাতাদের পড়তে কেমন লাগে?
কি অনুভূতি হয় ওদের?
পাতারা কেউ কেউ পড়তে পড়তে ওড়ে,
কেউ কেউ পড়ে ঠিক-ঠিক নিচে,
আর কেউ কেউ পঁচা নর্দমা ড্রেনে,
ওরাও কি একটা সম্মানজনক পড়ার জন্যে বাঁচে? বেড়ে ওঠে?
বুঝে আর ঝুজে আমার মনে হয়েছে
সব আব্বারাই, সবার আব্বারাই পড়ন্ত পাতার মতোই।
‘শুন্য করে ভরে দেয়া’র এই খ্যালায়
গান বা বিজ্ঞান-আব্বার ধার করা বিদ্যে নিয়েই পথ চলি
কবিতা আব্বা লিখতেন ভালোই,
অথচ আজ আব্বা নিজেই একটা কবিতা।
একবার আব্বাকে কবির ‘মায়ের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে’ পড়তে দিয়েছিলাম
আব্বা বললেন, “কবি, বাবাকে নিয়ে লেখেন নি?”
কি উত্তর দিয়েছিলাম মনে নেই,
শুধু মনে হয় আসলে বাবাদের নিয়ে কবিতা হয় না,
বাবারা হয় নিজেরাই কবিতার মতো প্রাচীন-নিষাদ,
বাবারা হয় বিস্বাদ-মাখা-বিষাদ।

