সাসা কাব্য

sabbiRif

পর্বঃ ১

সায়মনের মেজাজ খারাপ, সাথে মাথা ব্যথা! দুপুরে বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিল, অন্ধকারে বই পড়ার কারণে সেই যে মাথা ধরছে, এখনও কমেনি! বইয়ের নাম অপেক্ষা! ঘুমের মধ্যে সে একটা স্বপ্ন দেখেছে, তার পায়ের তালু তিন লেয়ার হয়ে গিয়েছে, অনেকটা জুতার সোল অর্ধেক খুলে গেলে যেরকম হয় সে রকম! সে হাটছে আর থপ থপ করে বাড়ি খাচ্ছে! এ পর্যন্ত হলে ঠিক ছিল! ঘুম থেকে উঠেও তার মনে হচ্ছে তার পায়ের একই অবস্থা! সে বার বার পায়ের দিকে তাকাচ্ছে, অস্বস্তি যাচ্ছে না বরং মেজাজ খারাপ হচ্ছে!

সায়মন মেজাজ খারাপ কমানোর জন্য স্বপ্নের কারণ আবিষ্কার করার চেষ্টা করলো, সে ইহ জনমে আধ-খোলা সোল পরে হেটেছে বলে মনে পড়ছে না! মাথা ব্যথাটা অবশ্য তার প্রায়ই হয়! অন্যদিন মাথা ব্যথা হলে সে নাপা-এক্সটা খায়, তাতে মাথা ব্যথা আধ-ঘন্টার মধ্যে কমে! আজ সে কম্বল থেরাপি নিচ্ছে! কম্বল কপালের উপর দিয়ে ডানে-বামে করা, তাতে আরাম হচ্ছে। অবশ্য গরমকালে এই থেরাপি কাজ করবে কি না কে জানে!

এখনও অবশ্য শীত তেমন জেকে পড়ে নি, সায়মনের বাইরে বের হওয়ার সময় হয়েছে। সে দিনের বেলায় কখনও বের হয় না, অন্ধকার হলে বের হয়। রাতে মানুষের এক্সপ্রেশন ঠিকমত বোঝা যায় না, তাতে করে কারও দিকে তাকিয়ে একবার ভেংচি কাটলেও হঠাৎ বুঝতে পারে না! আজকাল মানুষ শুধু বলতে চায়, কেউ শুনতে চায় না! সবার অনেক ইগো, অনেক মান অভিমান, সবাই চায় মানুষ তাকে প্রায়োরিটি দিক!

বাসা থেকে বের হবার সময় বড় ভাবীর সাথে দেখা, বড় ভাবীকে আজ কেমন উদাসীন দেখাচ্ছে! এর দুইটা কারণ হতে পারে, জিহান স্কুলে খারাপ রেজাল্ট করেছে, অথবা সিরিয়ালের কোন ক্যারেক্টারের চেহারা চেঞ্জ হয়ে গেছে! সায়মন ভাবীকে না দেখার ভান করে বেরিয়ে গেল। পাড়ার মাহতাব মিঞার দোকানে এক কাপ চা খেয়ে তার রাত:ভ্রমণ শুরু হবে! তার সবসময় ইচ্ছা সে হিমুর মতো খালি পায়ে হেটে বেড়াবে, কিন্তু মানুষের ছ্যাপ পায়ে লাগার কথা চিন্তা করে খালি পায়ে হাটতে পারে না!
– ভাইজান আজ শুধু চা খাইয়া যাইতে পারবেন না, গরম শিঙাড়া ভাজতাছি, শিঙাড়া খাইয়া তারপর যাইতে হইবো! ঐ মিডু, ভাইরে শিঙাড়া দে!
– তুমি এখন শিঙাড়া ভাজতেছ কেন? তুমি তো এগারোটার দিকে ভাজো!
– ভাইজান ছুডো পোলাটা আসার সময় বলছে তার জন্য যেন নিয়ে যাই, তাই এখন কয়েকটা ভাজতাছি! একটু পর দোকান বন্ধ করে বাসায় যাবো গা!
– মিঠু কেমন আছ?
– যে ভাইজান ভালা।
– ‘যে ভাইজান ভালা’ আবার কি? বলো, ‘জ্বি ভাইয়া, ভালো আছি’। আর তোমাকে না বললাম প্রতিদিন সকালে আমার কাছে পড়তে আসবা, আজ আসো নি কেন? কাল যেন তোমার চেহারা দেখি।

মিঠু চোখ ট্যরা ট্যরা করে তাকাচ্ছে, এর মানে সে সায়মনকে পাত্তা দিচ্ছে না! সায়মন শিঙাড়ায় এক কামড় বসালো, সাথে সাথে তার মাড়ি পুড়ে গেল, সাথে জিহ্বাও! এখন দুই দিন সে কোন কিছুর স্বাদ পাবে না!
– ভাইজান, শিঙাড়া কেমন হইছে?
– হুম ভালো!
– আপনার শিঙাড়া খাওয়া দেখে মনে হইতেছে না ভাইজান! শিঙাড়া খাইতে হইবো গরম গরম চাবাইয়া চাবাইয়া! তাতেই না আনন্দ! পুরুষ মানুষ এভাবে খাইবো, আর মাইয়া মানুষ খাইবো বাসী শিঙাড়া! বাসী শিঙাড়া আর বাসী মাইয়া মানুষ… হে হে হে… বুঝেন নাই ব্যপারটা!! হে হে হে… ঐ মিডু ভাইজানরে পানি দে!

সায়মনের দাতের মধ্যে শিঙাড়ার আলু ঢুকে গেছে, প্রচন্ড দাতে ব্যথা হচ্ছে! মানুষের আক্কেল দাত হয়না, আর তার আক্কেল দাত হয়ে অর্ধেক ভেঙে গেছে! সেই দাতের মধ্যে ঢুকে গেছে আলু! এই ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পাবার একমাত্র উপায়, পানি দিয়ে কুলকুচি করে আলু বের করা! মিঠু এখনও পানি দিচ্ছে না, সে মনে হয় বুঝতে পেরেছে সায়মনের দাত ব্যথা করছে! সায়মন উঠে গেল। সে দাতের ব্যথাকে আনন্দানুভূতি হিসেবে চিন্তা করতে থাকলো। পৃথিবীতে সবকিছুই চিন্তার উপর নির্ভরশীল, ব্যথা ব্যপারটা মানুষজন খারাপ ভাবে নেয় বলে মানুষের খারাপ লাগে, হয়তো ভালোভাবে নিলে এমনটা হতো না!

পর্বঃ ২

সাবিহার আজ মন খারপ! মন খারাপের একটা বিশেষ কারণ থাকতে পারতো, তবে সে কারণে তার মন খারাপ না! তার মন খারাপ কারণ জিহান তার বাবার মত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন! জিহান ক্লাস সিক্সে পড়ে, তার পড়ার কথা ক্লাস ফাইভে! মাত্রারিক্ত জ্ঞানের কারণে তাকে একবারে থ্রি থেকে স্যারেরা ফাইভে উঠিয়ে দিয়েছেন। ভাব-সাব যা মনে হচ্ছে সামনেবার হয় ক্লাস এইটে উঠিয়ে দিবে, না হয় স্কুল থেকে বের করে দিবে! এসব হয়েছে অতিরিক্ত বই পড়ার জন্য! এই বয়সের ছেলে-মেয়ারা কোথায় মাঠে গিয়ে খেলবে না হয় এটলিস্ট ট্যাব-মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকবে; তা না তিনি বাপ চাচাদের মতো সারাদিন বই পড়বেন। আগে বাবা বই কিনে দিত, এখন চাচা দেয়!

দুই বছর হলো জিহানের বাবা মারা গেছে, রফিক কিছুই করতেন না, তার জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল – এটলিস্ট পঞ্চাশ হাজার বই পড়া! Christopher Nolan এর সুটিং স্ক্রিপ্ট INCEPTION পড়তে পড়তে সে মারা গেল! বাবার অগাধ সম্পত্তি, কিছু না করলেও তার চলতো, জিহান কিছু না করলেও যে কিছুই যায় আসবে না তা সাবিহা জানে, তারপরও সাবিহা চায় ছেলেটা মানুষ হোক! সারাদিন বই পড়লাম কিন্তু পরিবাবের প্রতি, সমাজের প্রতি কোন দ্বায়িত্ব থাকবে না, এরকম কেউ আর যাই হোক মানুষের মধ্যে পড়ে না!

রফিক পরকাল, আত্মা এসব নিয়ে উদ্ভট-উদ্ভট গল্প করতো! একবার বলছিল, আচ্ছা ধরো একটা মানুষ মারা গেল, তখন তার আত্মা কোথায় যায়? তার আত্মা তো বডির সাথে কানেক্টড না! তখন কি অন্যান্য আত্মার সাথে কন্টাক্ট করতে পারে? আত্মার উপর কি ‘g’ এর কোন প্রভাব আছে? যদি না থাকে ধরে নিলাম আত্মা উড়ে যায়, আর যদি থাকে ব্যপারটা কি হবে ধরতে পারছো? অনেকটা চাঁদের দেশের মতো আত্মারা পুরোপুরি উড়ে যাচ্ছে না আবার পুরোপুরি মাটিতেও পড়ে থাকছে না, হালকা হালকা করে উড়ে বেড়াচ্ছে! এখন বাংলাদেশে যত মানুষ এত ছোট জায়গায় আত্মাদেরও জায়গা হবার কথা না! কল্পনা করো আমাদের বাড়ির উঠোনটায় আত্মারা গিজ গিজ করছে, তারা হাইড এন সিক খেলতে খেলতে মুখ থেকে ঢুকে নাক দিয়ে বের হচ্ছে! সাবিহা সেদিন রফিকের কথায় পাত্তা দেয়নি, আজ মনে হচ্ছে রফিকের আত্মা নিশ্চয় জিহানের মুখ থেকে ঢুকে মাথার মধ্যে গিয়ে বসে আছে, আর বের হচ্ছে না! সায়মনটাও আগে এত বই পড়তো না, গত এক বছর থেকে তারও একই রোগ হয়েছে!

রফিক মারা যাওয়ার পর সাবিহা তার মায়ের বাড়ি চলে গইয়েছিল, রফিকের বাবা-মা কেউ বেচে নেই! ও বাসায় মা, সে আর জিহান, ভালোই যাচ্ছিল দিনকাল! হঠাৎ মাও মারা গেলেন, সে হয়ে গেল একা! একজন বড়ভাই আছেন, তার পোস্টিং আবার রংপুর! জিহানকে টেককেয়ার করা ঝামেলা, তাই সাবিহা জিহানকে নিয়ে মোহাম্মাদপুরে শ্বশুরবাড়ী চলে এলো আবার! এক বছর হলো সে এ বাড়িতে অথচ সায়মনের কোন খেয়াল নেই তাদের দিকে! পারত পক্ষে সাবিহার সাথে কথা বলে না, যা কথা বার্তা বলে জিহানের সাথে! আশে পাশের মানুষজনও তাদের নিয়ে কথা বলে! সাবিহা পাত্তা দেয় না। আজ সকালে সাবিহার বড়ভাই এসছিল। সেও কথায় কথায় বলেছে, সায়মন ছেলেটা তো ভালো, ওকে বিয়ে করতে পারিস তো! মনুষজন কিছু বললে, জিহান যখন বুঝতে শিখবে তখন ব্যপারটা তাকে এফেক্ট করতে পারে! সাবিহার খুব মেজাজ খারাপ হলো তবে ভাইকে কিছু বলতে পারলো না।

পর্বঃ ৩

সায়মন হাটতে হাটতে শংকরে চলে এসেছে, এখানে তার জমজ বন্ধু রাহাত থাকে! ছেলেটা এ যাত্রায় মরে যাবে মনে হচ্ছে! তার হয়েছে আগেকার রাজা-বাদশাহদের মতো হাড় মটমটি নামক দুর্বোধ্য রোগ! ডাক্তার বুঝতে পারছে না আসলে কি হয়েছে, বলেছে বাইরে যান, চিকিৎসা করান! রাহাত হাসতে হাসতে বলেছে সাত সমুদ্র বারো নদী পার হয়ে তের নদীর মাঝখানে যে কড মাছ আছে ওটার লিভার খেলে কোন কাজে আসবে কি না? ডাক্তার রসিকতা নিতে পারে নাই, চোখ গরম করে তাকিয়েছে! রাহাত হুইল চেয়ারে ছাড়া এখন চলাচল করতে পারছে না, তবুও তার রসিকতা কমে নাই!
– আয় ভেতরে আয়, দোস্ত! শোন আমি সুস্থ হয়ে উঠলে একটা সাবান ফ্যাক্টরি দিব ঠিক করেছি। সাবানের নাম হবে ‘সায়মন এক নম্বর পচা সাবান’! একটা এ্যড টিভিতে যাবে আমাদের –
‘সায়মন এক নম্বর পচা সাবান
বেশী করে পাছায় ঘষুন,
পাছা ঠান্ডা তো মাথা ঠান্ডা’
হে হে হে!
– তুই তাড়াতাড়ি মর, আমার প্রতিদিন তোকে দেখতে আসতে ভালো লাগে না! আজ আমি গেলাম, জিহানের সাথে একটা সেশন আছে। ছেলেটাকে একটু বেশী ফাস্ট।

মাহতাব মিয়াঁর দোকান এখনো খোলা। আরেক কাপ চা খাওয়া যেতে পারে। দোকানে কোন কাস্টমার নেই, অনেকক্ষণ শান্তি করে বসা যাবে!
-মাহতাব মিয়াঁ, চা দাও এক কাপ। মিঠু কই?
-বসেন ভাইজান, মিডুরে দিয়া বাসায় শিঙাড়া পাঠাইসি! আমার যাইতে মন চাইলো না, তাই!
ভাইজান একটা কথা বলি?
-বলো!
-ভাইজান বিয়ে করবেন না? বেবাক মানুষ নানা রকমের কথা কয়, আমি পাত্তা দিই না অবশ্য, কারণ আর কেউ না চিনুক ভাইজান আমি আপনেরে ভালো করে চিনি!
– কিভাবে?
– আপনিও একদিন একটা চায়ের দোকান দিবেন, দেখবেন কোন মানুষ কি রকম বুঝতে পারবেন!

সায়মন এ পর্যন্ত তিনটা মেয়ে দেখেছে বিয়ের জন্য! প্রথম মেয়েটা বেশ সুন্দর ছিল, তবে বয়সটা একটু কম! মেয়ে দেখার পর ভাবী এসে বলেছে, এই মেয়ের বয়স বেশী কম তোমার সাথে মানাবে না! দ্বিতীয়বারও সাবিহা না করে দিয়েছে, কারণ মেয়েরা অনেক ভাই-বোন, আমাদের মতো দুইজনের ফ্যামিলীতে এসে ম্যাচ করতে পারবে না! তৃতীয়বারও ভাবী না করে দিয়েছে, বলেছে মেয়ে বেশী কথা বলে! সায়মন বলেছিল ভালো তো, আমি কম কথা বলি সে বেশী! উল্টোটা হলেই না মানাবে! সাবিহা মন খারাপ করেছে দেখে সায়মন না করে দিয়েছে! পরদিন মেয়ের ভাই এসে সায়মনকে বলেছে আপনাদের জন্য বাজার করতে যে টাকা লেগেছে ওটা ফেরত দেন! সাবিহা সাথে সাথে দিয়ে দিয়েছে! এরপর থেকে সায়মন আর মেয়ে দেখতে যায় নি! গত একবছরে সাবিহার আচার আচরণেও পরিবর্তন এসেছে! সে আগে সায়মনকে তুই তুই করে বলতো, এখন তুমি বলে সম্বোধন করে!
– ভাইজান, সাবিহা আপা ভালো মাইয়া! আপনার তার দিকে তাকানো উচিত! মানুষের মুখও বন্ধ হইবো! আমদের তো ঘুরে-ফিরে সমাজেই থাকতে হয়!

সায়মন উঠে বাসার দিকে যাচ্ছে, মাহতাব মিয়াঁ পেছন থেকে চা খেয়ে যাওয়ার জন্য ডাক দিল, সায়মন না শোনার ভান করলো, তার এই মুহুর্তে বাসায় যাওয়াটা বেশী জরুরী! আবেগ খুব খারাপ জিনিস, এটা খুব কম সময়ের জন্যে মনের মধ্যে থাকে। অবহেলা করলেই ঝামেলা!

সাবিহা দোতালার বারান্দায় বসে গুনগুন করে গান গাচ্ছে, পরিচিত গান, ‘একা পাখী বসে আছে শহরের দেওয়ালে!’ সায়মনকে দেখে থেমে গেল। তাকে আজ নীল শাড়িতে অপূর্ব দেখাচ্ছে, অনেকটা রূপার মতো।
-কিছু বলবে?
-ভাবী, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে?
সাবিহা কষে একটক চড় দিল সায়মনকে! সায়মনের ভাঙা দাতটা আরেকটু ভেঙে গিয়েছে মনে হয়!

পর্বঃ ৪

আজ জিহানের বৌভাত! সাবিহার-ই সব দেখা শুনা করা লাগছে, সায়মন সকাল থেকে রান্নার বই নিয়ে বসে আছে কি জানি একটা নতুন রেসিপি রান্না করবে তার ছেলের বিয়েতে, অক্সটেল আর মুগডাল দিয়ে কিছু একটা! সায়মনের জমজ বন্ধু রাহাত খাবার-দাবার ম্যানেজমেন্টের দ্বায়িত্ব নিয়েছে! তার আশে পাশের মানুষজন একটু পর পর হেসে লুটিয়ে পড়ছে! সে এখন বেশ সুস্থ, সে আর সায়মন সত্যি সত্যি সাবানের ফ্যাক্টরি দিয়েছে, সাবানের নাম সায়মন এক নম্বর পচা সাবান; তবে কোন বিজ্ঞাপন কোম্পানি সেই পাঞ্চ লাইনে বিজ্ঞাপন করে দিতে রাজী হয় নি। বিজ্ঞাপনে গেছে –

‘সায়মন এক নম্বর পচা সাবান।
বেশী করে মাথায় ঘষুন,
মাথা ঠান্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।’

সাবিহা দৌড়ের উপর আছে, আজ মনে হয় অতিথিদের না খাইয়ে বিদায় করতে হবে! সায়মনের সাথে বিয়ে হওয়ার পর জিহানটা যে মানুষের মতো মানুষ হয়েছে এতেই সে খুশী।।

SabbiRif এর সবগুলি গল্প পড়ুন এখানেঃ সাব্বিরিফ

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Reviews

Popular Articles