প্রথম গল্প : “শাওয়ার”
বনির রাতে ঘুম ভেঙে যায়। মাথার উপরে মনে হয় কেউ পানি ঢেলেই যাচ্ছে। কলকল করে শব্দ। বাড়িওয়ালী মহিলা কিছুটা ক্লান্ত হয়ে বলেন-
– আরে বাবা বলোনা। ওটা আমার মেয়ের শাওয়ারের রুম। লাইনটা তোমার ফ্লোরের ছাদ ঘেষে গেছে ।একটা শুধু ঝর্ণা লাগানো। এখন প্রতি রাত ২/৩ তার সময় তার গোছল করা লাগে, বুঝেছো? আমি বকে দেবো..
মিনুর মুখটা ভেসে ওঠে বনির চোখে। আঠারো পেরিয়ে যাওয়া কোমল আদুরে মুখ। সে আকুল হয়ে বলে-
– না আন্টি। প্লিজ না করবেন না। ছোট মানুষ। করুক। আমার তেমন সমস্যা হয়না…
সে রাতে কল কল করে পানি ঝরার শব্দ হলো বেশ। একবার পানি পরে থেমে গেলো। ঝর্ণা বন্ধ ? বনি ভাবতে চেষ্টা করে। মিনু এখন কি অবস্থায়। গা ভিজে গেছে ? আচ্ছা মেয়েরা কতটা খোলামেলা হয়ে গোছল করে? নিশ্চয় সাবান শ্যাম্পু লাগাচ্ছে সমস্ত গায়ে। সাবানের ছোঁয়া গলা থেকে নামছে, ঘাড় ঘুরে বুকের উপরের অংশ ছুঁয়ে সে নামছে। বনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে সিগ্রেট জ্বালায়। এরপরেই পানির স্রোতের শব্দ শোনা যায়। মিনুর দেহ ছুঁয়ে আহ্ললাদী জল গড়িয়ে যাচ্ছে। বনি মিনুকে ভাবে। ভর্তি পরীক্ষার অ্যাডমিশন নিয়ে দুইদিন তাদের বেশ দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিলো। সে মিনুকে গাইড করেছিলো। মিনুর ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির খবর নেওয়া উচিত। যেতে পারে সে। যাবে একদিন শীঘ্রই।
দুইদিন শাওয়ারের পানির শব্দ নেই। বাড়িওয়ালীর সাথে দেখা হয়ে গেলো,। বনি “বলবেনা” “বলবেনা” করেও বলে বসে-
-আন্টি বাসার সবাই ভালো আছে? মিনুর অসুখ নাকি?
-হ্যা বাবা। দুইদিন ধরে জ্বর। তুমি জানলে কি করে?
-মনে হলো আর কি… এখন তো অনেকেরই জ্বর হচ্ছে…ওর প্রস্তুতি কেমন হচ্ছে অ্যাডমিশন টেস্টের।
-আর আমার মেয়ের পড়ালেখা।
-আসবো একদিন আন্টি…জ্বর কমুক …গাইড দেবো…আজ আসি…
চারদিন পর থেকেই আবার সেই বিস্ময়কর পানির স্রোতের শব্দ। বনির অকারণে ভালো লাগে, শিহরণ জাগে, সারারাত ঘুম হয়না আর। বনি এপাশ ওপাশ করে। বনি ঠিক করে মিনুকে প্রস্তাব দিবে প্রেমের অথবা ভার্সিটি পাশ করলেই বিয়ে করবে। মিনুকেই করবে? কেমন হয়? মাকে পাঠাবে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। বিয়ের পর রাত তিনটার দিকে মিনুর শাওয়ার রুমে তারা দুইজনে মিলে…
বনির স্বপ্ন পুরোন হলোনা। গভীর শীতের মাঝে হঠাৎ বিয়ে হয়ে গেলো মিনুর। খুব মেধাবী বাবা মা মরা একটা ঘর জামাই কিনে এনেছেন আন্টি। বনির কিছুটা কষ্ট হলো। সে খুব বেশি নয়। তবে তার কষ্ট অন্য জায়গাতে গিয়ে তীব্র হলো। রাতেএখন একাধিক বার শাওয়ারের পানি ঝরে।
বনি এই শব্দে আপ্লুত হয়না, বিরক্তে মন ভরে যায়। শীতের দিন তো কয়েকবার পর্যন্ত পানির স্রোতের শব্দ কানে ভাসে। এরা কি ঘুমায় না? সারা রাতই ওসব চলে? বনির অকারণে অভিমান হয়, ঘৃণা হয়, অক্ষম রাগ হয়।এখন আর বনির কল্পনাতে ভালো কিছু আসেনা, শুধু চোখে ভাসে দৈত্যের মতো একটা জন্তু মিনুর চারপাশে হাঁটছে। বনি সে দেখাকে আলাদা করতে পারেনা চোখ থেকে।
দুইদিনের মাঝে বনি আলাদা মেস খুজে নেয়। তার বন্ধুর সাথেই।
-আন্টি হঠাৎ করেই বাসা পেয়ে গেলাম বুঝেছেন। একদমই ভার্সিটির কাছে।…. এখন তো অনেক চাপ আন্টি। ফাইনাল ইয়ার। ক্যাম্পাসের আশে পাশে থাকাই ভালো। আজকেই যাবো আন্টি। ফার্নিচার আর কয়টা। কিন্তু সামনের মাসের ভাড়াটা দিয়ে যাবো। জি আন্টি। দুয়া করবেন। জি। আঙ্কেলকে বলবেন। মিনুকেও। আসি আন্টি। সালাম।
দ্বিতীয় গল্প : “লেডিস ব্যাগ”
মেয়েটার হাতে একটা কমলা রঙের লেডিস ব্যাগ ছিলো। সে জিনিস আসলে আসিফের চোখে পড়ার কথা নয়। প্রকৃতপক্ষে এতো কোমল আর মোহনীয় চেহারা মেয়েটির। কোনায় জমে থাকা মায়াতে আর্দ্র চোখ আর টানা নাক যেন গানিতিক হিসাব মিলিয়ে পরিপাটি করে বানানো। এমন মুখের দিকে না তাকিয়ে কে যায় হাতের ব্যাগ নিয়ে ভাবতে। কিন্তু ভাবতে হলো কারন মেয়েটা আসিফের সামনে থেকে উঠে যাবার সময় বললো, ভাইয়া ব্যাগটা একটু কাছে রাখেন। আমি আসছি।
এরপর বিহ্বলিত মুগ্ধ এক দর্শনে প্রেমের গভীরে নামা আসিফ ব্যাগ হাতে বসে রইলো তো রইলোই। এক-দুই-তিন-চার ঘন্টা। দোকান বন্ধ হয়ে গেলো।
আসিফ পরদিনও ব্যাগ পাশে নিয়ে বসে রইলো সারাদিন। পরেরদিন । পরেরদিনও। এভাবে বেশ কিছুদিন। “অতিথি” হোটেলেই দিন রাত এটা সেটা খেয়ে পার করে আসিফ। মালিকের সাথে বন্ধুত্বও হয়ে যায় তার।
হোটেলের ক্যাশিয়র বিদায় নেওয়ায় আসিফ সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাত্র সাত হাজার টাকায় ক্যাশিয়ারের জব নিলো।মালিককে বুঝালো। আসলে তার তো কাজ পড়ালেখা। পাশে ক্যাশের হিসাব করা। বেশ হয় তার জন্য। আড়ালে থাকে মেয়েটার জন্য অপেক্ষা। পাশে কমলা রঙের লেডিস ব্যাগ ।
তিন মাস চলে গেল।এর মাঝে আসিফের বাবা মারা গেলেন। আসিফ বাবার হক থেকে হিসাব নিকাশের পরে বেশ কিছু টাকা পেলো। ফিরে এসে আসিফ এসে দেখে অতিথি হোটেল বন্ধ। মালিক মারা গেছেন। মালিকের ছেলে দেশে এসে হোটেল বিক্রি করতে চাইলো। আসিফ কিনে নিলো। হোটেলের ভিতরে চারপাশে সিসি ক্যামেরা লাগানো হলো। প্রতিদিনই আসিফ কাষ্টমার চেক করে মনিটরে। সে নিজেও দোকানে এসে গোলাপী ব্যাগটা নিয়ে বসে থাকে অনেকটা সময়। পৃথিবীর সবচেয়ে স্নিগ্ধ, মায়াবতী মেয়েটার অপেক্ষায়।
আসিফ দোকানটির নামও চেঞ্জ করে দিয়েছে। নাম নিয়ে অনেকেই বাধা দিলো। খাবার দোকানের নাম এমন হয় নাকি! আসিফ কারো কথায় শুনলোনা।সে দোকানের নাম দিয়েছে “লেডিস ব্যাগ”।
তৃতীয় গল্পঃ “প্রেমি”
আমার প্রেম ছিলো প্রেমির সাথে। বেশ আবেগে মাখা প্রেম। স্কুল জীবনের শেষের দিকের প্রেম। এই বয়সের প্রেম উথাল পাথাল করে দেয় জীবনকে। আমিও আবেগের তীব্রতায় ডুবে গিয়েছিলাম। প্রেমির নামে পুরো একটা জীবন লিখে দিতে চেয়েছিলাম। লিখে দেবার আগেই ছয় বছরের প্রেমকে স্তব্ধ করে দিয়ে প্রেমির বিয়ে হয়ে গেলো। আমার ভার্সিটি জীবন তখন। আটকাতে পারলামনা কোনভাবেই। প্রেমির আরো ছোট ছোট দুইটা বোন। মাতৃহীনা দুই বোন। প্রেমি সাহস পেলোনা বাবাকে না করতে। বিয়ের পর প্রেমিরা চলেও গেলো। পুরো পরিবার কোঁথায় গেলো জানা হয়নি। জানতে চাইওনি।
আমি তখন অন্য জগতে চলে গেছি। রাত নামলে গাঁজা টানতে ইচ্ছে করে। নাক মুখ ভরে গাঁজার রস নিয়ে চন্দ্রিমা উদ্যানের পতিতা মেয়েদের পাশে বসে থাকতে ইচ্ছে করে। আমি নেমে যাচ্ছিলাম নীচে। অনেক নীচে। প্রেমিকে হারিয়ে আমি প্রেমির অযোগ্য হবার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। চূড়ান্ত রকমের অযোগ্য।
চাকরি জীবনটা শুরু করার পর অবশ্য আমি কিছুটা ফিরতে শুরু করেছিলাম জীবনে। তবে নষ্টামী আমাকে ছেড়ে যায়নি। এবার কিছুটা অভিজাত নষ্টামী শুরু করলাম। টাকা আসছিলো এদিক সেদিক দিয়ে ভালোই। আমিও শুকনো গাঁজা বাদ দিয়ে দামী মদ যোগাড় করতে শিখেছি। চন্দ্রিমার আশে পাশের পাতলা স্বাস্থ্যের অভাবী মেয়েদের গায়ে হাত না দিয়ে হোটেলে গিয়ে মেয়ে বেছে নিতে শিখে গিয়েছিলাম। এ জীবন আনন্দের, উত্তেজনার, ঝর্ণার মতো অশান্ত কোমল।
সে রাতেও বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম কয়েক পেগ টেনে নিয়ে। হোটেলে ফোন দিলাম। হোটেল ম্যানেজার বললো, বাছাই করার উপায় নেই এতো রাতে। একটা মেয়ে আছে, খুব বেশিদিন ধরে এই লাইনে আসেনি। পাঠিয়ে দেই?
মুখের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলাম। বিড়বিড় করে বললাম, “প্রেমি তুমি এসব?” …সে অসহায় ভাবে তাকালো, ক্লান্ত বিদ্রুপের হাসি দিয়ে বললো, “আমার জামাইটা একটা পাপ ছিলো। দুনিয়ার সেরা পাপ। দুই বছরের মাথায় ডিভোর্স হয়ে গেলো। বাবা প্রায় শুন্য করে দিয়ে চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে। এরমাঝে এক গাদা লোন। আমার চাচারা মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। আমাদের কি হবে বলতো? ছোট দুটো বোন। কয়েক মাস চেয়ে চেয়ে খেয়ে আর পারছিলামনা। …” প্রেমির গলা বেধে যাচ্ছিলো। আমি প্রেমির হাত ধরতে যাচ্ছিলাম। সে ধরতে দিলোনা, সোজা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, “আজ ছিলো সতেরো তম উদ্ভ্রান্ত রাত। ষোলটা পাপের দাগ রয়ে গেছে আমার শরীরে। আমাকে ছুঁয়োনা তুমি…”
বাইরে বের হয়ে সিগ্রেট ধরালাম। রাতের আকাশে অনেকটা মেঘ। তার ভিতরে আটকে রয়েছে চাঁদ। ঘৃণা লাগছে প্রেমির উপরে। মনে হচ্ছে লাত্থি দিয়ে বের করে দেই হোটেল থেকে। প্রতারক মেয়ে। ঠিক ঠিক শাস্তি পেয়েছে। মেরে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো তাকে। আবার আকাশের দিকে তাকালাম। মেঘ থেকে চাঁদ বের হয়ে এসেছে। কি সুন্দর লাগছে দেখতে।
পা টেনে টেনে রুমে ঢুকলাম। প্রেমি বললো, “আমি চলে যাচ্ছি। টাকা দিয়ে নিশ্চয় তোমার পুরানো প্রেমিকাকে উপভোগ করতে ইচ্ছে হবেনা।” আমি তার হাত ধরে বললাম, “আমারো আজকে উনিশ তম রাত। আঠারোটা পাপের দাগ আছে আমার গায়ে। আরো কত কুৎসিত স্পর্ষের স্মৃতি আছে আমার হাতে। কুষ্ঠরুগির স্যাতস্যাতে দাগের মতো। কাউকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে নয়, নোংরামির তাগিদে আমি এসব করেছি। আমাকে নেবে তুমি?
প্রেমি কাঁদছে। আমি পাশে গিয়ে তার মুখ স্পর্শ করে বললাম, তোমার পবিত্র মুখ ছুঁয়ে বলছি, একটা সুযোগ পেলে আমিও শুদ্ধ হয়ে যাবো।
চতুর্থ গল্পঃ “কুহকিনী”
বনের বেশ গভীরে দুই কামরার রুদ্ধ ছোট বাসাটা। আগে বন বিভাগের কর্মকর্তারা থাকতেন। বারো বছর হলো এখন কেউ থাকেনা। জাফর আর আবির দাঁড়িয়ে আছে ছোট বাসাটার সামনে। বন বিভাগের কর্মচারী হারিস মিয়ার কাছ থেকে চাবি নিয়ে এসছে তারা। তালা খুলে ভিতরে ঢোকে। ভিতরে নোংরা অবস্থা। নোংরা পাশ কেটে তারা বারান্দার কাছে যায়। জাফর টেপ রেকর্ডার সেট করে দেয় সেখানে।
কাপাসিয়ার ভিতরের এই বনে রাতের বেলায় অদ্ভুত সব পাখির ডাক শোনা যায়। তার রেকর্ড করে রাখা দরকার। বিশেষ করে যৌনাবেগে অস্থির বাজ কোকিলের ডাক। তাদের সিনেমার জন্য লাগবে। জাফর আর আবির কল রেকর্ডার সেট করে বের হয়ে এলো। সন্ধ্যা নামি নামি করছে। তারা গাড়িতে বসলো।
পরের দিন এসে তালা খুলে রেকর্ডার নিয়ে গেলো জাফর। বাসায় শুয়ে শুয়ে শুনছে। অসংখ্য পাখির ডাকাডাকি। যৌন উন্মাদ পাখিরা কি ব্যাকুল সুরে ডাকছে, আকর্ষণ করছে সংগীদের। এর মাঝে বাজ কোকিলের ডাক কোনটা? হঠাৎ পাখির ডাকের শব্দ কিছুটা ম্রিয় হয়ে গেলো। একটা আবেদনময়ী বিষন্ন নারী কন্ঠ বেজে উঠলো। সে বলছে, “জাফর, তুমি এসে চলে গেলে কেন? একটু থাকতে জাফর। আজ রাতটা আমার এখানে থাকতে। এসো তুমি আবার…জাফ…।”
জাফরের ভিতরে আতঙ্ক ভর করে বসলো। আবার কেমন একটা মোহনীয়তা। কে ডাকে? সেই গভীর জঙ্গলে? চারিদিক থেকে বন্দী ঘরে? ঘর তালা দিয়ে এসেছে সে, একমাত্র চাবিটিও তার পকেটে। এটা অসম্ভবই যে এতো রাতে কোন মেয়ে এই ঘরে ঢুকবে। জাফর আবার রেকর্ডটা বাজিয়ে শোনে। সেই জায়গাতে। আবার শোনে । বারবার। অনেকবার।
পরের দিনও জাফর আবিরকে নিয়ে রেকর্ডার নিয়ে সেই বাসাতে যায়। যদিও আবিরকে সে কিছুই জানালোনা। সে দিনের রেকর্ডে মেয়েটির কন্ঠ মনে হলো আরো বেশি আবেগময়ী, আরেকটু বেশিই নেশাগ্রস্থ। বারবার বলছে, “জাফর এসো। একদিন থাকোনা আমার সাথে। জাফর…” তারপরের দিনের রেকর্ডেও সেই মাদকী কন্ঠস্বর। ঠিক চতুর্থদিন জাফর একাই প্রায় ছয় ঘন্টার পথ বাইক চালিয়ে সেই ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। সন্ধ্যা নেমে আসছে। একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে ভিতরে ঢুকেছে জাফর। মনে হচ্ছে ঘরটা কেউ আদর করে গুছিয়ে রেখেছে। জাফর খাটের উপর বসে পরলো। এখন অপেক্ষার সময়।
জাফর হারিয়ে গেছে। তাকে কোঁথায় না খুঁজেছে আবির, জাফরের পরিবার, পুলিশ। বন বিভাগের সেই বাসাটা , তার আশেপাশে উন্মাদের মতো খুজেছে তারা। টেপরেকর্ডারটা পাওয়া গেছে । কিন্তু ভিতরে সিডিটা নেই। জাফরকে দুষ্ট লোকেরা নিয়ে গেছে? অথবা বন্য কোন প্রানীর আঘাতে …?
তিনমাস পর সিনেমার প্রযোজক আবিরকে ডেকে বলল, “আপনি দায়িত্ব নিন। অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর ছিলেন, এবার ডিরেক্টর।“ আবির দায়িত্ব নিলো । ঠিক যেখানে জাফর শেষ করেছিলো সেখান থেকেই সে শুরু করবে ভেবেছে। গভীর রাতের বনের পাখীদের ডাক নিতে এবার অন্য বনে গেলো তারা। এবারো লোকালয় থেকে অনেকদুরে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের একটা বদ্ধ রুমে টেপ রেকর্ডার লাগিয়ে চলে গেলো তারা বাহিরে। পরেরদিন বাসায় বসে রেকর্ড শুনছিলো আবির। মাঝামাঝি পর্যায়ে গিয়ে একটা কোমল চিকন আন্তরিক নারী কন্ঠ পাওয়া গেলো। আকুল হয়ে মেয়েটি ডাকছে “আবির আসলেই যখন চলে গেলে কেন? থাকতে না হয়। আসোনা আবার। একদিন থাকো আমার সাথে। আবির…” দ্বিতীয় দিনেও একই কাহিনী, তৃতীয় দিনেও তাই। আবির ঘোর লাগা চোখে দুপুর পেরিয়েই রওয়ানা দেয় বনের সেই ঘরের উদ্দেশ্যে। আবিরের বাইক লোকালয় ছেড়ে ছুটে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই…