জননী (স্তনঃ ২)

১।
আমার বন্ধু হাবীব নেওয়াজের আগের পোস্টিং ছিলো শেরপুর-নকলাতে । তিনবছর আগে একটা বদলি অর্ডার পেয়ে তিনি চলে যান রাজশাহীতে। শেরপুরে তিনি তার আগে আড়াই বছর ছিলেন। এই তথ্যটা বের করতে আমার তেমন কোন কষ্ট হলোনা। সুতরাং আমার কাজ আরেকটু সহজ হয়ে গেলো। আমি একদিন সকাল সকাল ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হয়ে গেলাম শেরপুরের দিকে। শেরপুর পাওয়ার আগে আগেই নকলা পরে। নেমে গেলাম।

কর্মব্যস্ত একটা অফিস। কিন্তু সেখানে গিয়েও সমাধান করতে পারলামনা কিছুই। হাবীবের সাথে যাদের বন্ধুত্ব ছিলো সবারই বদলি হয়ে গেছে। আসলে সেই সময়ের বেশির ভাগ জনই বদলি নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে । কাউকে প্রশ্ন করেও উত্তর পেলামনা। একজনের মোবাইল নাম্বার পাওয়া গেলো। ফোন করে দেখলাম মোবাইল বন্ধ। হাবীবের সময়ের যে দুইজন এখনো এই শাখায় আছে তারা হাবীবের একদমই কাছের মানুষ নয়। সামান্য আলাপ ছিলো তার সাথে।ব্যর্থ মনে হলো সব কিছু।ঘাবড়ে গেলাম, বিব্রতও হলাম।

সেই শাখা অফিস থেকে নেমে এলাম। বাইরের একটা ভাতের দোকান দেখলাম। সাদা পাপড়ির মতো ভাতের দানা। মনে হচ্ছে প্লেট ভর্তি করে আছে সাদা বেলি ফুলের পাপড়ি। মনে মনে হাসলাম। ভাতের দানাকে এর আগে কোনদিন এতো আকর্ষনীয় মনে হয়নি। সাদা ভাতের উপরে ঝালে লাল হয়ে যাওয়া গরুর মাংস মাখিয়ে মুখে তুলেছি, “অমৃতের মতো লাগছে। আমার ঠিক সামনে বসে থাকা এক ভদ্রলোক দেখলাম পাশের বন্ধুকে বলছে, ড্রাইভাররা যে খাবার দোকানগুলোতে খায় সেগুলোই সবচেয়ে ভালো হয়।দামেও কম হয়, স্বাদেও দারুন।। ড্রাইভাররাই একটা শহরের সবকিছু চেনে, জানে।“ আরেকটু খাবার খাওয়ার দরকার ছিলো আমার কিন্তু আমি উঠে গেলাম। তারপর আবার হাবীবের অফিসের দ্বিকে ছুটলাম।

তারা তিনজন আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি বললাম, “আপনারা কেউ নিশ্চয় হাবীবের বাসায় গিয়েছেন। কোনদিন ড্রপ করে আসতে।“ একজন বললো, “আমি গেছি। তবে বাসা পর্যন্ত যাওয়া হয়নি। বাসার গলির সামনে থেকে তাকে নিতাম। আবার নামিয়েও দিতাম।“ আমি বিড়বিড় করে বললাম, “সেইটুকুই অন্তত যাই।আপনি পরিস্কার করে বলেন। ড্রাইভার বলল, চলেন আপনাকে সেই গলির মুখেই নামিয়ে দিয়ে আছি। কিন্তু ভাড়া দিতে হবে।পাচশো টাকা।“

হাবীব থাকতো শেরপুর শহরে। শেরপুরে ঢুকে অনেকটা পথ পার হয়ে উকিল পাড়াতে ঢুকতে হয়। বেশ খানিকটা পথ পার হয়ে একটা গলির সামনে ড্রাইভার সাহেব আমাকে নামালো। গলির দুই পাশে কমপক্ষে ২০/৩০ টা বাসা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে। এই প্রকান্ড গলির সামনে দাঁড়িয়ে আমার মাথা ঘোরাতে লাগলো। তিন /চার বছর আগে এই গলিতে হাবীব নামে একজন লোক থাকতো, সেই কথা কাকে বলবো? কাউকে বললেই কি সে উত্তর দিতে পারবে? আমি খুব হতাশার মাঝে পরলাম। একমাত্র ভরসা গলির মুখের চায়ের দোকান। আমি সেখানে গিয়ে এক কাপ চা খেলাম। সিগ্রেট ছেড়ে দিয়েছি অনেক দিন , তবু দোকানদারকে খুশি করার জন্য সিগ্রেটও ধরালাম একটা। তারপর গল্প তুললাম। সাত বছরের পুরানো দোকান। হাবীবের কথা তুললাম, তার ব্যাংকের চাকরির কথাও বললাম। সে চিনতে পারলো না। আমি বসেই রইলাম। যত লোক আসছে আমি জিজ্ঞেস করছি, হাবীবকে চেনে কিনা? সময় বয়ে যাচ্ছে। বেলা পাচটা বেজে গেছে তখন। দোকানদার অবাক হয়ে বললো, “আপনি এহানেই বইয়া থাকবেন?“ আমি বললাম,”জ্বি। যত মানুষ আসছে যাচ্ছে সবার সাথে কথা বলবো। আমার একজনকে খুজে পেতে হবেই।“ সন্ধ্যা সাতটার দিকে একটা ক্লু পেয়ে গেলাম। মানুষটা খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন, “আপনার তাকে কি প্রয়োজন?” আমি বললাম, “আছে একটা দরকার!” “তাহলে যান, বাম দিকের পাচ নাম্বার বাসা। চাইর তলায় তারা থাকতো। এহন আর কেউ থাকেনা। যান। বাড়ি ওয়ালার দুনিয়ার রাগ। কতা কইলেন বুঝবেন । যান।”

বাসার নাম – “ক্ষনিকের আবাস। আমি গেটে কড়া নাড়লাম। ছন্দহীন পায়ের ক্রমাগত শব্দ পেলাম। এলোমেলো ভাবে কাছে এসে দরজা খুলল। বৃদ্ধ রকমের মানুষটা চশমার উপর দিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কে বলছেন। কি চান?” আমি সালাম দিয়ে বললাম, “অনেক কথা! ভিতরে ঢুকতে দেন।“ তিনি পথ করে দিলেন, আমি ভিতরে ঢুকলাম।

.২।
আমি বসে আছি হাবীবের সামনে। হাবীব খুব অস্বস্তি নিয়ে তাকিয়ে আছে আমা্র দিকে। ফাস্ট ফুডের দোকান হিসাবে এই দোকানটা ভালো। একদম নীরব । মানুষজন খুব একটা নেই। শুনশান নীরবতা। আমি বললাম, “এসবই তো সত্য হাবীব?”
সে বিরক্ত হয়ে বললো, “তুই কি বলতে চাস?”
-তেমন কিছুইনা। আমি জানতে চাচ্ছি, তুই কি অপরাধ বোধে ভুগিস?
-অপরাধবোধ তো পরের কথা। আমি তো ভেবে পাইনা কি অন্যায় আমি করেছি?
– অন্যায় করেছিস।
-তার অসুখের জন্য তো আমি দায়ী নই।
-সে নিজেও দায়ী ছিলোনা। অসুখ তো অসুখই। তার দুর্ভাগ্য!
-আমি সেই দুর্ভাগ্যের দায় টানবো কেন? আমার যেটুকু চিকিৎসা করার করিয়েছিলাম। এরপর আমারো তো জীবন আছে, মন আছে…
-এবং তোর শরীর আছে। সবচেয়ে শক্তিশালী কথা হচ্ছে এটাই। তোর শরীর আছে। সেই শরীরের দায় মেটাতে তুই সব বিবেক বোধ-মায়া-ভালোবাসার উর্দ্ধে উঠে গেলি…
-একদমই না। কোনভাবেই তুই এটা প্রমান করতে পারবি না…
-বেলীকে তুই কেন আনলি তোর বাসায়?
-বেলীর গল্প পর্যন্ত তুই জেনে গেছিস? কি করে জানলি?
-জেনে গেছি। কি করে জেনেছি তা তোকে বলতে পারবোনা এখনি…
-আমার বাচ্চাটার বুকের দুধের দরকার ছিলো। বেলী ফিডিং করতে সক্ষম ছিলো…
-শুধুই বাচ্চার জন্যই এনেছিলি? তুই নিজেও কি বেলীতে মজে যাসনি?

হাবীব বেশ অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। মনে হলো একটা বড় রকমের ধাক্কা তার গায়ে লাগলো।
-এসব কি বলছিস তুই? আন্দাজে কথা বলিস।
-আন্দাজ নয়। দীপা ভাবিকে তুই সবদিক দিয়েই চেপে ধরলি। একবারও ভাবলিনা তার মনে কতটা যন্ত্রনা তৈরি করলি। একদিকে বাচ্চাকে নিয়ে গেলি তার বুক থেকে অন্যদিকে নিজেও বেলীর কোলে সমার্পিত হইলি…এবং এমন করলি যে দীপা ভাবি যেন সব দেখতে পায়…জ্বলে পুড়ে মরে যায়…
-বেলীর প্রেমে পাগল হয়ে যাবার কথা কোথা থেকে শুনেছিস জানিনা? কিন্তু যদি তাও হয়েই থাকতাম সেটা তো অস্বাভাবিক না। আমার প্রয়োজন…
-প্রয়োজন শব্দটা বাদ দে। প্রয়োজন তো দীপা ভাবিরও ছিলো, ছিলোনা? এই যে, তুই একটু আধটু ভালোবেসেই ফেলে রেখে চলে যাইতিস…
-তুই এসব কোথা থেকে বলিস। আশ্চর্য্য? লেখক হয়েছিস বলে সবকিছু বানিয়ে বানিয়ে… তুই কিন্তু সীমা অতিক্রম করছিস…
-বেলীকেও তো বিয়ে করিস নি।
-তার স্বামী ফিরে এসেছে দেশে। আমার ছেলেরও ফিডিং নেবার বয়স ফুড়িয়ে গেলো…
-নাকি তুই কোন সাক্ষীও রাখতে চাসনি?

এবার হাবীব মনে হলো বেশ উগ্র হয়ে গেলো। হাতের নীচে রাখা পানির গ্লাস ফেলে দিলো নীচে।
ওয়েটার ছুটে আসলো। আমি বিব্রত হয়ে বললাম, “কন্ট্রোল ইওর সেলফ হাবীব। আমি কিন্তু শেষ করিনি এখনো। লেট মি ফিনিশড। এরপর রাগ দেখাবি। আর নইলে এই আমিও বিপদে ফেলতি পারি তোকে।“

হাবীবের চোখে কেমন একটা নীরবতা কাজ করলো। সে ক্লান্ত শরীর নিয়ে চেয়ারে বসে পরলো। এরপর আমার দিকে তাকিয়ে অসহায় গলায় বললো,
-আমি তোর কি ক্ষতি করেছি? কেন এমন করছিস?
আমি ব্যাগ থেকে একটা ছবি বের করে তার হাতে দিয়ে বললাম, তোর শেরপুরের বাড়ীওয়ালার কাছ থেকে এই ছবিটা পেয়েছি। তুই আছিস, দীপা ভাবি আছে আর তোদের বাচ্চাটা। সে বাড়ীওয়ালাও দীপা ভাবির কথা বলতে গিয়ে কেদে ফেলেছে। আর তুই? মানুষটিকে মাইনাস করে দিয়েছিস তোদের জীবন থেকে?

হাবীব বেশ বিরক্ত হয়ে আমার দিকে তাকালো। তার চোখ ক্রমশ কৌতুহলী হয়ে উঠলো। মুখটা একটু এগিয়ে এনে শীতল গলায় বললো, “তুই কি আমার খোজ রাখতিছ নিয়মিত? আজ ২৪ বছর পর তোর সাথে দেখা আমার । আমার জীবনের এতো খোজ খবর তোকে কে জানালো? আমার কাছে খুব বিস্ময়কর লাগছে।“ আমি চুপ করে বাইরে তাকিয়ে রইলাম। রাজশাহীর পথে পথে গরমের রোদ উথলে পরছে। ঝকমক করছে পীচ-ঢালা পথটা। এই অপূর্ব শহরে আমার কতবার আসা হয়েছে। কিন্তু এবারের অভিযান যেন পুরোই অন্যরকম। আমি হাবীবের দিকে তাকালাম। তারপর নরম গলায় বললাম,
-দিপা ভাবিই বলেছেন। তিন সপ্তাহ আগে তিনি আমার বাসায় এসে বলে গেছেন।
হাবীবের চোখ মনে হয় জ্বলে উঠলো অস্বাভাবিক বিস্ময়ে। এরপর একটা উথলে পড়া তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে সে বললো,
-দিপা মরে গেছে তিন বছরের বেশি আগে। আর তিন সপ্তাহ আগে তোর সাথে দেখা করেছে?
-হ্যা করেছে। না করে থাকলে, না বলে থাকলে… এত কিছু মিলে যাচ্ছে কি করে? বল!
-তুই কি বলছিস তুই জানিস?
-জানি। জেনে শুনেই বলছি।
-তুই ভুত-প্রেতে বিশ্বাস করিস।
-না । অবশ্যই না। কিন্তু আমি “মা” শব্দে বিশ্বাস করি। জননী শব্দে বিশ্বাস করি। আমার মন বলেছে , সব ঠিক আছে তিনি এসেছিলেন।
-আমার কিছুই বোধে আসছেনা। তোরা কি চাস”
-এতো বোধের দরকার নেই। সে শুধু একটা জিনিসই চাইছে। তার সন্তান তার নামে বড় হোক। মায়ের নাম বলার সময় তার কথা বলুক।“ হাবীব বেশ বিরক্ত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। একসময় ফিস ফিস করে বললো-
-একেতো তোর এই ভুতের গল্প অবিশ্বাস্য।।
-কিন্তু কোন একটা তথ্যতো ভুল নয়। আমি গত তিন সপ্তাহ ধরে তার হিসাব মিলিয়ে এসেছি…
– কি করবো আমি বল?
-তোর ছেলে সত্য কথা জানবে।।
-তুই ভাবতে পারিস একটা বাচ্চা ছেলের উপর এসব ব্যাপার কি পরিমান ইফেক্ট ফেলতে পারে…
-সত্যই সুন্দর। একটা মানুষ কি পরিমান যন্ত্রনা আর দুঃখ নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে ভাবা যায়। এতো বড় শারিরীক যন্ত্রনা সয়েছে। নিজের সন্তানকে দূরে দূরে থাকতে দেখেছে। নিজের স্বামীকে…
-তাকে তো চলে যেতে বলিনি আমি…
-বাধ্য করেছিস। আমি খুব হিসাব করে মিলিয়ে দিতে পারে তোর প্ররোচনায় সে আত্বহত্যা করেছে…আমি একটার পর একটা প্রমান তৈরী করেছি…
-আমাকে জেলে পাঠাবি?
-না। সে তা দাবী করেনি। তার দাবীই সামান্যই। তার সন্তান জানুক তার মায়ের নাম কি?
-আমি আমার সন্তানকে এই নোংরা গল্প জানাতে চাচ্ছি না। আমি সবাইকে ছেড়ে এসেছি। রিয়াকে বিয়ে করেছি। আমি চাইনা দীপার গল্প সে জানুক।
-ব্রেস্ট ক্যানসার নিয়ে লজ্জার কি আছে? অসুখতো মানুষেরই হয়। ভাবীর এই অসুস্থতার কথা তুই কাউকেই জানাইস নি। লজ্জা লেগেছে? সো ফানি!
-সেটাই সব নয়। আমি চাইনা আমার বাবু এসব গল্প জানুক…
-চাসনা কারন ভয় পাচ্ছিস। ভয় পাচ্ছিস এই ভেবে যে, তোর সন্তান তোর আচরনের কথা হয়তো বুঝে যাবে। তুই ঘৃনার পাত্র হবি। কিন্তু এটা জেনে রাখিস সত্য যদি লুকিয়ে রাখিস তাহলে একদিন তুই তোর সন্তানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার যোগ্যতাও হারাবি…” হাবীব উঠে দাড়ালো। চিৎকার করে বললো,
“তোর যা খুশি কর। আমি যেমন চালাচ্ছি তাই চলবে। আমি দেখে নেবো তুই কি করতে পারিস আমার।“
আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম, “তাই হবে।“ এরপর উঠে চলে গেলাম।

৩।
দরজা খুলে দিলো রিয়া ভাবীই। আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম, “আপনি আমাকে কেন ডেকেছেন? হাবীব যা চায় তাই বলবেন আবার?” সে বাকা ঠোটের হাসলো। তারপর বললো, ভিতরে আসেন ভাই।আমি ভিতরে ঢুকেই দেখলাম, হাবীবের ছেলেটা সেইদিনের ওয়ালে ঝুলানো তাদের তিনজনের ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। সেই ছবির পাশে ওয়ালে আরেকটা ছবি নতুন টাঙানো হয়েছে দেখলাম। সেই ছবি, শেরপুরের বাড়ীওয়ালার কাছ থেকে নেওয়া ছবিটা। হাবীব-দীপা আর আলিফের ছবি। আলিফ আমার দিকে ঘুরে দীপার ছবির দিকে আংগুল বাড়িয়ে দিয়ে বললো, তুমি একে চেনো? এটা হচ্ছে দীপামা। আমার দুইটা মা। সে আমাকে রিয়ামার হাতে তুলে দিয়ে চলে গেছে। আবার আসবে।

আমার কেমন কান্না পাচ্ছিলো ভীষন। আমি ভাবলাম, আমার কাজ হয়ে গেছে। রিয়া আমার সামনে এসে বললো, বিশ্বাস করেন ভাই, আমি চাইনি আলিফ তার মায়ের নাম ভুলে যাক। আমাকে মা বলে তাকে বঞ্চিত করুক। আমিও তো মেয়ে। আমি কি করে আরেকজন মাকে ঠকাই?”

সে একটু থামলো। আবার বলতে শুরু করলো, “কিন্তু হাবীব কোনদিন চায়নি। দীপা মরে যাবার চার মাসের মাথায় আমাকে বিয়ে করে। আর বলে কোন ভাবেই যেন, আলিফ তার জন্মদাত্রীর কথা না জানে। আমাকে যে মা ডাকে। আমার নামই যেন জানে।আপনার সাথে কি কি নিয়ে ঝগড়া হয়েছে শুনেই আমি বুঝেছি আমার কি করতে হবে। আমি আপনাকে কথা দিলাম ভাই, অন্তত আমি তার জন্মদাত্রীকে ভুলতে দেবোনা। আপনি বারবার এসে দেখে যাবেন…

আমার চোখ এবার আর বাধা মানলোনা। আমি চোখ মুছে আলিফের মাথায় হাত রাখলাম। তারপর নেমে এলাম পথে। কড়া সুর্যের আলোতে নিজের প্রশ্বস্ত ছায়ার দ্বিকে তাকিয়ে, কেমন সন্তুষ্ট লাগলো গর্বও বোধ হলো কিছু, প্রথমবারের মতো। আমি আকাশের সুর্য্যের দিকে চোখ রাখলাম। আচ্ছা এভাবেও চোখ রাখা যায়। চোখের সুর্য্যস্নান শেষ হলেই আমি পৃথিবীর সাথে একাত্ব হয়ে হেটে যেতে লাগলাম।

প্রথম পর্ব পড়ুনঃ স্তন (প্রথম পর্ব)

আমার অন্য লেখা পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Reviews

Popular Articles