বাবা-মার অত্যন্ত আদরের সন্তান অনিকেত। অর্থবিত্তের দিক দিয়ে বাবা-মা দুজনের অবস্থা সমাজে উদীয়মান। সেই সুবাদে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বস সে। এই চাকরি কখনোই সন্তুষ্ট করতে পারেনি অনিকেত কে। সে সবসময় নিজে কিছু করে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলা। বেশ লম্বা, হ্যান্ডসাম, প্রতিষ্ঠিত জীবন সবই আছে অনিকেতের। কিন্তু প্রেম কখনো তার জীবনে এসেছিল কিনা তার কোন নিশ্চিত উত্তর নাই।
এত বড় কোম্পানির বস সে কিন্তু সামান্যতম অহংকার বোধ তার ভিতরে নাই। সেদিন কোম্পানির মিটিংয়ে, ইরা প্রশ্ন করে বসলো স্যার আপনি কি বিবাহিত? অনিকেত খুবই বিনম্রতার সাথে বলল মিটিং এর সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়তো এই প্রশ্নটিই।
ইরা যে মনে-মনে অনিকেত কে অনেক পছন্দ করে এটা বুঝতে তার একমূহূর্ত দেরী হলো না। কিন্তু সে তার পার্সোনালিটি নিজের জায়গায় রাখলো। একজন মেয়ে সম্পর্কে একটা পুরুষের ভিতর সব সময় যেমন একটি অনুভূতি কাজ করে সেই অনুভূতিটা বেশিরভাগ সময়ে তার থেকে দূরে ছিল। অবশ্য অল্পবিস্তর তাদের ভেতরে কথাবার্তা চলতোই। এত টুকুর ভেতরে অনিকেত বুঝতে পারে ইরার জীবনে তার গুরুত্ব কতখানিক।
অনিকেতের বিশ্বাস এ জীবন শূন্য থেকে শুরু এবং শূন্যতেই শেষ। মাঝখানে যা কিছু হয় সবকিছুই অপূর্ণতা আর দুনিয়ার প্রয়োজন মাত্র। নিজের একাকীত্ব মানুষ যখন চরম পর্যায়ে ভালোবাসতে শুরু করে তখন অন্য মানুষের প্রয়োজন কমতে থাকে। অনিকেতের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক সেরকম কিনা তাও একটি প্রশ্ন?
এখন ইরা বিবাহিত। সুন্দর ফুটফুটে এক রাজকন্যা ও আছে তার। অপরূপ অনিকেতের প্রিয় বন্ধু তার সাথেই ইরার বিয়ে হয়েছে। তখন কোভিড এর সময়। অনিকেত হঠাৎ করেই ইরা কে ফোন করে বসলো। গলা ব্যথা আর জ্বর একেবারে কাহিল করেছে তাকে। ইরা আর অপরূপ দুজনেই আসলো। এই করোনায় সবার ভেতরে যে ভয় ইরার ভেতরে সে ভয় মোটেও নেই। অপরূপ বাজার করে আনলো আর ঔষধ কিনে আনল। আর ইরা বাজারগুলো রান্না করলো। দুইজন মিলে মুহূর্তেই গুছিয়ে তুলল সংসারটি। অপরূপ হঠাৎ প্রশ্ন করল, অনিকেত প্রেম অথবা বিয়ে কবে করছো?
অনিকেত উত্তর দিল, এ জীবনে প্রেম না আসুক।