আল্লামা ইকবাল যখন একজন ইসলামিক দার্শনিক
“কিতনি আজীব হে গুনাহো কি জুস্তেজু ইকবাল, নামাযভী জালদি মে পাড়তে হে ফির সে গুনাহ কারণে কে লিয়ে।”
অনুবাদঃ কত অদ্ভুত এই গুনাহ করার ইচ্ছা ইকবাল, নামাযও দ্রুত পড়ে আবার গুনাহ করার জন্য। (সম্মানিত পাঠক লেখকের উর্দূ ভাল না😁)
না কালমা ইয়াদ আতাহে, না দিল লাগতে হে নামাযও মে ইকবাল, কুফর বানা দিয়া দো দিন কা মোহাব্বত মে!
“সারে জাঁহাসে আচ্ছা হিন্দুস্তাঁ হামারা” আমরা অনেকেই হয়ত জানি না এই গানের রচয়িতা আসলে কে? কিন্তু পাঠক জানলে অবাক হবেন এই গান যা লতা মাঙ্গেসকারের কন্ঠে ভারতের সব দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠানে শোনা যায় তার রচয়িতা আর কেউই না বরং আল্লামা ইকবাল।
প্রকৃত নাম মুহাম্মদ ইকবাল হলেও তিনি আল্লামা ইকবাল নামে ব্যাপক ভাবে সুপরিচিত। অবিভক্ত ভারতবর্ষের পাঞ্জের শিয়ালকোট নামক স্থানে জন্ম এই মহাকবির। জন্ম ৯ নভেম্বর ১৮৭৭ সালে। তিনি একাধারে রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ ও আইনজীবী(ব্যারিস্টার) ছিলেন। ইসলাম ধর্মের উপর সম্মুখ জ্ঞান ও ভালবাসা ছিল তার। পাঠক এসব তথ্য সহজেই উইকিপিডিয়াতে পাবেন তার পরও কিছুটা তথ্য দেওয়ার দায়িত্ব আমার।
আজকে আমাদের লেখার মূল বিষয় হল তার দার্শনিক জীবন।
“ধর্ম কোনো মতবাদ নয়, কোনো পৌরহিত্য নয়, কোনো অনুষ্ঠান নয়, বরং ধর্ম এমন একটি জীবনবিধান যা মানুষকে বিজ্ঞানের যুগেও তার দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত করে এবং তার প্রতীতিকে দৃঢ় সক্ষম করে দেয়, যার ফলে সে সত্যোপলব্ধিতে সক্ষম হয়ে উঠে।” – আল্লামা ইকবাল।
আমরা যেটাকে ধর্ম মানি তার ভেতর তিনি দেখেছিলেন ভিন্নতা যে মুসলমান সর্বদা শাহাদাতের চিন্তায় কাতর থাকবার কথা সে কীনা তাসবিহ জপে বেহেশতের কথা চিন্তা করে। আইনস্টাইন একবার বলেছেন যে যত বেশি বিজ্ঞান জানবে সে ততো বেশি আস্তিক হবে।
তো এখন আমরা যেটা সভ্যতা বলে জানি তা অনেক আগেই আরবরা পূর্ণ করে এসেছে। মদ, জুয়া, মাদক আর নারীসঙ্গ পেলে মানুষ সেটাকে কুলনেস (আধুনিক ভাষা) মনে করে। ঠোঁটের কোণে একটা বিঁড়ি আর ফোনে টিডিং করে গার্লফ্রেন্ডের ম্যাসেজ আসলে আহা কি ম্যাচুউরিটি। আর ফ্রি মিক্সিং নাচ গান তো আছেই। তাই বলে যাদের গিএফ বা বিএফ আছে তাদের কিছু বলছি না তারা দ্রুত সম্পর্ককে সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম থেকে সামাজিক করে ফেলুন।
অধ্যেতা একটু ভেবে দেখুন তৎকালীন আরব সমাজ কিন্তু এমনই ছিল এবং তারই পরিবর্তন করতে মহানবী (সাঃ) এর আগমন হয়েছিল।
ইকবালের লেখনিতেই এই ভাবটাই ফুটে উঠে বারবার। তিনি পশ্চিমাদের দূর করে ভাবেন নি কিন্তু আপন স্বীকয়তা ভুলে যাওয়াতে কঠিন বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। যেমনঃ
“নগ্ন উরু প্রদর্শনীর জাদুতে বাড়েনি অগ্রগতি
দাড়ি-গোফ কমিয়ে আসেনি উন্নতি।
ধর্মহীনতায় পায়নি তারা এই সাফল্য
ইংরেজী অক্ষরেও নেই কোন যাদু মন্ত্র।
পশ্চিমা উন্নতি এসেছে কেবল তাদের জ্ঞান-বিদ্যায়
আজ তারা মহাধনী মোদের ছেড়ে দেয়া পেশায়।
শার্ট- প্যান্ট -টাই পরার নাম নয় প্রগতি
দাড়ি- টুপি- পাগড়ি নয় জ্ঞান- বিজ্ঞানের বিরোধী।” -আল্লামা ইকবাল
আল্লামা ইকবাল তখন থেকেই জানতেন এমন অবস্থা চলতে থাকলে মুসলমানদের কোন উন্নতি নেই। কেবল চরম বিপর্যয় আর আক্ষেপ। তাই তিনি বলেছিলেনঃ “মানুষ সজাগ সচেতন নয়, কিছুক্ষন পর কি ঘটবে তার জীবনে তা তার জানা নেই, অথচ হাজার বছর বেঁচে থাকার উপায় উপকরণ যোগাড়ে ব্যস্ত।”
আজকের পর্ব শেষ এখানেই যাওয়ার মুখে একটা শের না বললেই না!
“খুদি কো কার বুলন্দ ইতনা কে হার তকদীর সে পেলে খুদা বান্দে সে খুদ পুছে বাতা তেরি রাজা কেয়া হ্যায়”
অর্থাৎ, নিজেকে তোল এত উচ্চতায় কি খোদা তাকদির লেখার পূর্বে তোমার কাছে তোমার ইচ্ছা শুনে।
আপনার লেখা নিয়ে মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই তবে ঊর্দূ লেখায় আরেকটু মনোযোগ দিলে ভালো হয়। (পড়তে সামান্য কষ্ট হয়েছে)